শমসের মবিন-তারেকের আলোচিত সেই ফোনালাপ
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
বুধবার শমসের মবিন চৌধুরী অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে রাজনীতি থেকে অবসরের জন্য পত্র দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বরাবর।
কিন্তু তার আগে গত বছরের জানুয়ারিতে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এর সঙ্গে শমসের মবিন চৌধুরীর প্রায় ১১ মিনিটের ফোনালাপ হয়। দু’জনের ফোনালাপ নিয়ে তখন বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিলো।
তারেক রহমান ও শমসের মবিন চৌধুরীর সেই ফোনালাপটি ছিলো নিম্নরূপ:
তারেক জিয়া: কেমন আছেন?
শমসের মবিন চৌধুরী: আর আছি কিভাবে। দেশ যেভাবে আছি সেভাবেই।
তারেক জিয়া: ওবায়দুল কাদের দুই দিন আগে একটা কথা বলেছেন, খেয়াল করেছেন নিশ্চয়।
শমসের মবিন চৌধুরী: হ্যাঁ, খেয়াল করেছি এবং সেটা কালকে টকশো-তে মাহমুদুল্লাহকে দিয়ে যে, সে যেটা বলেছে, তার মানে কি? ওই যে ওইটা বলছ যে, সমঝোতা হবে, তাইতো?
তারেক জিয়া: না না, সমঝোতা হচ্ছে পর্দার আড়ালে?
শমসের মবিন চৌধুরী: হ্যাঁ, সমঝোতা হচ্ছে পর্দার আড়ালে এবং সমঝোতা হলে আস্তে আস্তে ছাড়া পাবে। হঠাৎ কিছু হয়ে যেতে পারে।
তারেক জিয়া: সমঝোতাটা কারা করছে?
শমসের মবিন চৌধুরী: ওরা (আওয়ামী লীগ) ওদের নিজেদের মাঝে সমঝোতা করছে।
তারেক জিয়া: আমাদের কারো সাথে কী কথা বলেছে? আপনি কিছু জানেন কী?
শমসের মবিন চৌধুরী: আমার জানামতে, তারা কারো সাথেই আলোচনা করছে না। আজকে তো তারা আলমগীর ভাইয়ের বিরুদ্ধে মার্ডারকেজ দিয়ে দিয়েছে।
তারেক জিয়া: না, সেটা তারা দিতে পারে। কিন্তু উনি এইরকম হাইড-এন-সিক করছে কেন? উনি তো একজন পলিটিক্যাল লিডার একজন, পলিটিশিয়ান একজন।
শমসের মবিন চৌধুরী: কে?
তারেক জিয়া: আলমগীর সাহেব।
শমসের মবিন চৌধুরী: আমরা একটু পরে যাব, ম্যাডামের কাছে যাওয়ার জন্য বসে আছি। তো, এটা কি আলাপ করা হবে?
তারেক জিয়া: ওনার ওখানে তো কথা বলা সমস্যা আছে। ডিটেইলস বলাটা মুশকিল। কিন্তু কথা হচ্ছে, এইরকম হাইরেনসিক করে তো বরঞ্চ রিপারটেশন খারাপ হচ্ছে।
শমসের মবিন চৌধুরী: এটা তো ম্যাডামকে বলা হয়েছে কয়েকবার। কিন্তু বুঝলাম না, কিন্তু ম্যাডাম তো এটা আমলেই নিচ্ছেন না, আমি যতটুকু বুঝি আর কি।
তারেক জিয়া: কিন্তু আমার মনে হয় না যে, কী এরকম হয়েছে। সে যদি পালিয়েই থাকে, সে আন্দোলনেও নেতৃত্ব দিতে পারবে না, কথা বলতে পারবে না। সে তো চুপ করে হাইরেনসিকই আছে, তো লাভটা কী? এতে আরো খারাপ হচ্ছে তো। ডিস্ট্রিক্টের কর্মীরা মার খাচ্ছে আর উনি পালিয়ে আছে, এতে লাভটা কী হচ্ছে? এতে বেনিফিট তো হচ্ছে না।
শমসের মবিন চৌধুরী: এই প্রশ্নটা অনেকেই করছে। আমি ম্যাডামকেও দুই তিনবার প্রশ্ন করেছি। ম্যাডামের একটা কথা হলো যে, যদি ওনাকে ধরে ফেলে, সবাইকে ধরে তাহলে কাজ করবে কে মাঠে? কাকে দিয়ে আমি কাজ করাবো?
তারেক জিয়া: উনি কি খুব একটা কাজ করছে? কাজ করতে পারছেন? কোনো ইনস্ট্রাকশন দিচ্ছেন, কোনো ডিস্ট্রিক্টেই তো কথা বলছে না, কিছু হচ্ছে না। কারো খোঁজ-খবর হচ্ছে না। লাভ হচ্ছে কী? ডিফিকাল্ট টু ফাইন্ড হিম। নো ওয়ান অ্যাবল টু টক টু হিম। উনি যে চার্জে আছে, সেটার জন্য উনি যে ডিসিশন দিবে, ইনস্ট্রাকশন দিবে সেগুলোও তো হচ্ছে না।
শমসের মবিন চৌধুরী: হ্যাঁ, এটা ধরো হায়ার লেভেলে হচ্ছে। রাইটিং থাকলেই আমার পক্ষে কোনো ডিসিশন দেওয়া মুশকিল।
তারেক জিয়া: না, আই অ্যাম জাস্ট ডিসকাস উইথ ইউ।
আরেকটা বিষয় হচ্ছে, বোধ হয় এরকম একটা গুজব ছড়াচ্ছে। আমি যা শুনেছি তাই আপনারে সাথে ডিসকাস করছি। সেখানে আপনার নামও আছে, কয়েকজনের নাম আছে মানে ওবায়দুল কাদেরের ব্যাপারটার সাথে ইনভলভ করছে। এটা এক নম্বর।
দুই নম্বর হচ্ছে, দেশে এখন গেস্ট আসছে। তো তারা বলছে যে, গেস্ট আসলে অর্থাৎ তারা আসলে দেশে যেন কিছু না হয়। তো এরকম কি কোনোকিছু চিন্তাভাবনা আছে?
শমসের মবিন চৌধুরী: এখন আমার যা মনে হয়, গেস্টদের জন্য বিরতি দেওয়া, না বিরতি দেওয়া অর্থহীন।
তারেক জিয়া: এটাই যদি আপনার মনে হয়, তাহলে আপনি মনে হয় ঠিকই বলছেন। এখন তো বিরতি দেওয়ার আর কোনো স্কোপ বোধ আর নেই।
শমসের মবিন চৌধুরী: হ্যাঁ, এখন তো ডিসপ্রেইজ ইজ জিরো নাও।
তারেক জিয়া: এখন অন্য কোনো কিছুতে গেলে, তাতে যদি ‘ইজ ব্যতিক্রম ইন এ কমফোর্টেবল সিচুয়েশন’ হয়, তাহলে কি আমাদের জন্য সিচুয়েশন খুব ভালো হবে?
শমসের মবিন চৌধুরী: না, কখনই না। তখন বিরোধী দলের মাঠ পর্যায়ে সবাই হতাশ হয়ে যায়। ডিমোরালাইজড হয়ে যাবে।
তারেক জিয়া: ওদের আপ লাইনে আনতে পারবেন না আপনারা?
শমসের মবিন চৌধুরী: হ্যাঁ, ওদেরকে আর রাস্তায় ফিরিয়ে আনা যাবে না সহজে।
তারেক জিয়া: সহজে না। ইজ নট পসিবল ফর কোয়াইট এ লং টাইম। আমার যা মনে হয়। কয়েকবার এরকম হয়েছে তো, এরকম ব্রেক দিয়ে দিয়ে। এখন যে আসলে আসবে। এটা স্যাবোটাজ হবে। এখন এই জিনিস যদি কনটিনিউ না করে, ব্রেক করা হয় তাহলে এটা স্যাবোটাজ হবে।
শমসের মবিন চৌধুরী: ব্রেক করার তো কোনো স্কোপও নাই, কারণও নাই, লজিকও নাই।
তারেক জিয়া: আপনারা তো যাচ্ছেন, উই কেন টক।
শমসের মবিন চৌধুরী: দিস ইজ মাই সাজেশন, এখন ব্রেক দেওয়ার কোনো স্কোপ নেই।
তারেক জিয়া: ক্লিয়ার এটাতে স্টিক থাকতে হবে। আপনার সাথে বোধ হয় আরো কেউ কেউ যাবে, তাদের বোধ হয় ব্রেক দেওয়ার একটা চিন্তা-ভাবনা আছে।
শমসের মবিন চৌধুরী: দিস ইজ মাই পজিশন, অন্যরা কি বলে না বলে বাট দিস ইজ অলওয়েজ মাই পজিশন। এখন কিন্তু ইভেন টেম্পোরারি ব্রেক দেওয়ারও সুযোগ নাই।
তারেক জিয়া: এখন ব্রেকে যাওয়াই যাবে না। লেট ইজ কনটিনিউ।
শমসের মবিন চৌধুরী: আরেকটা বিষয়, তারানকো যে আসছে ইউএন থেকে। একটু আগে আমাকে ফোন করেছিল, এই নিয়ে তিন দিন দুই বার কল করল। লাস্টে সে আমাকে বলল, দেখো অফিস অফ হিউম্যান রাইটস একটি স্ট্যাটমেন্ট ইস্যু করবে, ক্রিটিসাইজিং, ভায়োলেন্স এন্ড এভরিথিং এজ রিলেটেড উইথ এরেস্ট নিয়ে করবে। আমি বললাম যে, আই হোপ ইট ইজ এ ফেন্ডশীপ। তখন সে বলল যে, হোয়াট ইজ দিস সল্যুউশন? আমরা যদি ইলেকশান পিছিয়ে দেই। আমি বললাম যে, দেখো, সিচুয়েশন ইজ সার্চ। শর্ট গ্যাপ বিটউইন নাও এন্ড ইলেকশান উইল নট সলিউশন এ প্রবলেম, হেজ টু বি লঙার গ্যাপ। এই লঙার গ্যাপটা যদি তোমরা করাতে পারো, যদি তোমাদের একসেস থাকে, সেক্ষেত্রে প্রাইম মিনিস্টারকে দিয়ে যদি কল করাতে পারো, তাহলেই ইটস মাই ওয়ার্ক, আদার দ্যান ইটস মাই নো ওয়ার্ক।
তারেক জিয়া: না, আপনি গ্যাপ দিয়ে কী করবেন? সলিউশন তো একটাই। শী হেজ টু একসেপ্ট দ্য ডিমান্ড। এখানে ইলেকশানে গ্যাপ দিয়ে আপনি কী করবেন? তাহলে লাভ হলো কী?
শমসের মবিন চৌধুরী: না ধরো, গ্যাপ বলতে কী। শী রিজাইনস এন্ড পার্লামেন্ট ডিজলভস জানুয়ারিস। যতদিন পর্যন্ত সে থাকুক জানুয়ারির ২০, ২১, ২২ তারিখ পর্যন্ত। তার পরে তো নাইনটি ডে’স পাওয়া যাবে। ফাইনাল ডিমান্ড হলো, নাইনটি ডে’স এর পরেও যদি সে প্রাইম মিনিস্টার থাকে, তাহলে তো লাভ হলো না।
তারেক জিয়া: না না, আপনারা এত দিন দিয়েন না। এরপর কিন্তু বেঁচে থাকা মুশকিল হবে। কিছু লোক ছাড়া বাকিদের বেঁচে থাকা মুশকিল হবে। ডিমান্ড যেটা, শী হেজ একসেপ্ট দি ডিমান্ড রাইট নাও। এখন যেই আসুক। পার্লামেন্ট ডিজলভ হবে এবং সে হেজ একসেপ্ট দি ডিমান্ড। রাইট হেজ দি মোমেন্ট। আপনি এটাকে লঙার করলেই কিন্তু সুযোগ পেয়ে বসবে। এটাকে সুযোগ দিলেই তারপরে সে বলবে, ২৪ তারিখের পর আমি আর থাকব না। কিন্তু ২৪ তারিখ পর্যন্ত তারা সময় পাবে এবং এর মধ্যেই অন্য কিছু করে ফেলবে।
শমসের মবিন চৌধুরী: সেটাও ঠিক, দ্যাট অলসো রাইট।
তারেক রহমান: ডিমান্ড মানলে ডিমান্ড মেনেছ, বাট এখন….
শমসের মবিন চৌধুরী: ওকে, স্ট্যাটবার করবে অন কন্ডিশন বাট শী উইল রিজাইন ইমিডিয়েটলী।
তারেক রহমান: আর যেটা প্রোগ্রাম হচ্ছে পাবলিকলি, সেটা কনটিনিউ।
শমসের মবিন চৌধুরী: কাম ওয়ার্ক মে…
তারেক রহমান: আরে কাম ওয়ার্ক মে, এ তো হয়েই গেছে। এসপার-ওসপার তো হয়েই গেছে। এখন ঠিক আছে চলতে থাক। এখন আপনারা যদি এতে ব্রেক দেন, তাহলে ওদের কনসিকুয়েন্সি অন্যরকম হবে। মিনিমাম যাদের পলিটিক্স করার নলেজ আছে, তাদের এটা বোঝা উচিত।
শমসের মবিন চৌধুরী: বাট আমি কিন্তু নেভার স্পোকেন ফর এ ব্রেক। যখন থেকে এই পর্যায়ে গড়ায় আমি বলেছি, এটা কিন্তু ননস্টপ চলতে হবে। ফর্ম কি নিবে, ম্যাডাম কখন প্রেস কনফারেন্স করবেন, কী এনাউন্সমেন্ট করবেন বাট উই হেজ টু গো আপ।
তারেক জিয়া: হ্যাঁ, এটা উনি আগামী তিন চার দিনের মধ্যে করতে পারেন। এর মধ্যে তিনি আরেকটা জিনিসও বলতে পারেন যে, পত্রিকার সেসব সম্পাদকরা ফেয়ার ইলেকশানের কথা বলছেন, তাদের সবাইকে নিয়ে এক্সচেঞ্জ অব অপিনিয়ন এর একটা উদ্যোগ নিতে পারেন।
শমসের মবিন চৌধুরী: বাট মেইন অবরোধ চলতে থাকুক। আর ওটা তিনি ঢাকাতে বসেই করতে পারেন।
তারেক জিয়া: রাইট, এটা অবরোধ নিয়ে তো কোনো কথা হচ্ছে না। অবরোধ টু কনটিনিউ।
শমসের মবিন চৌধুরী: ঠিক আছে, দেখি আজ যখন ডাকা হবে। আই গিভ উইল মেক দিস সাজেশন।
তারেক জিয়া: হ্যাঁ, আদারওয়াইজ কিন্তু অনেক মানুষই বেঁচে থাকতে পারবে না। আপনি যদি তুলে নেন এটা এখন। তাহলে কিন্তু অনেক মানুষের ক্ষতি যারা অবরোধ তুলে নেওয়ার প্রপোজ করবে, তাদের কেরি করতে হবে এই লাইয়েবিলিটি। বহু মানুষের ক্ষতি হয়ে যাবে।
শমসের মবিন চৌধুরী: ঠিক আছে, তাহলে সেইভাবেই কথা বলব আমি।
তারেক রহমান: এই বিষয়গুলো তো চাপা থাকবে না। কে কে প্রোপোজ করেছে যে, এসব তুলে নেওয়া হোক। বিদেশিরা আসছে, নাহলে তাদের সাথে সম্পর্ক খারাপ হবে। যখন বহু মানুষের, নিজেদের ক্ষতি হয়ে যাবে, তখন বের হয়ে যায় তো কেকে এই প্রোপোজ করেছে। তখন তো এই লাইয়েবিলিটি তাদের নিতে হবে। মুশকিল হয়ে যাবে ব্যাপারটা।
শমসের মবিন চৌধুরী: ঠিক আছে, সেইভাবেই তাহলে আজকে আলাপ করব আমি।
তারেক জিয়া: এখন সন্ধ্যা সময় বা রাতের বেলায় দিতে পারে যে ডিক্লিয়ার, তা অ্যানোদার সেভেনটি টু আওয়ার্স।
শমসের মবিন চৌধুরী: ঠিক আছে। বলে দেখি আজকে।
প্রতিক্ষণ/এডি/এনজে